“অতি শীঘ্রই চিম্বুক থানচি রুটে বিলাসবহুল হোটেল নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে হবে”- এই মর্মে গত শনিবার পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং বরাবর এক চিঠিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই দাবী জানায়। সেই সাথে তারা এও জানায় যে, পরবর্তীতে আদিবাসীদের ভূমিতে কোনো নির্মাণ বা প্রতিষ্ঠাপনার কাজে অবশ্যই সেখানকার অধিবাসীদের পূর্ব সম্মতি নিতে হবে।
চিঠিতে দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক প্রধান ওমর ওয়ারেচ বলেন, বান্দরবানে পাঁচ তারা হোটেল নির্মাণের ফলে সেখানকার ম্রো আদিবাসীদেরকে তাঁদের পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হবে।
তিনি জাতি সংঘের বাংলাদেশভিত্তিক নিউজ সাইট UNB এর বরাত দিয়ে বলেন, বান্দরবানের চিম্বুক থানচি রুটে এই হোটেল নির্মাণের ফলে ম্রোদের গ্রাম সম্পূর্ণ বিনাশ হবে, ফলে বিপুল সংখ্যক ম্রো অধিবাসী উচ্ছেদের শিকার হবেন। এর মাধ্যমে সেখানকার ম্রো জাতির সামাজিক, অর্থনৈতিক, ঐতিহ্যবাহী এবং সাংস্কৃ্তিক কাঠামো ধ্বংস হয়ে যাবে।
এতে আরও বলা হয়, সেখানে বসবাসরত ম্রো এবং অন্যান্য আদিবাসী জাতিরা আশংকা করছে যে এই হোটেল নির্মাণের ফলে সেখানকার বন, পানির উৎস, পবিত্র স্থানসমূহ এবং জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে পড়বে।
এছাড়া, এই হোটেল ও তৎসংশ্লিষ্ট প্রজেক্টের কারণে সেখানকার জনগোষ্ঠীর প্রথাগত নীতি ও আইনকে অবমাননা সহ কমপক্ষে প্রায় ৮০০ একর জমি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অধিগ্রহণ করা হবে।
এমতাবস্থায় পাঁচ তারা হোটেল নির্মাণ কাজ আদিবাসীদের অধিকার রক্ষায় ও উন্নয়ন পরিকল্পনায় আদিবাসীদের অংশগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় সাপোর্ট প্রদানে অঙ্গীকারবদ্ধ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও প্রতিশ্রুতিকে লঙ্ঘন করবে।
ওয়ারেচ চিঠিতে ইন্টারন্যাশনাল লেবার অরগানাইজেশন (আইএলও) এর ১৯৫৭ সালের ইন্ডিজেনাস ও ট্রাইবাল পপুলেশন নীতি অন্তর্গত “কোনো নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, মালিকানা ও শ্রম” এবং এই নীতির ১১ ও ১৩(২) ধারার রক্ষায় বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিকে স্মরণ করে দেন।
বাংলাদেশ সংবিধান ২৩(ক) এর উদ্ধৃত “রাষ্ট্র বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা,নৃ গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে“ -এর কথা উল্লেখ করে ওমর ওয়ারেচ বলেন আদিবাসীদের ভূমিতে এই হোটেল নির্মাণ কাজ বাংলাদেশের সাংবিধানিক চুক্তিকে লঙ্ঘন করবে।
0 Comments